বাংলাদেশে বিদ্যুতের সংকট আরও গভীর হয়েছে। দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক করে দিয়েছে আদানি পাওয়ার। রিপোর্ট অনুযায়ী, আদানি পাওয়ার ঝাড়খন্ড লিমিটেড (APJL) $846 মিলিয়ন বকেয়া বিলের কারণে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। আগে বাংলাদেশ আদানি প্ল্যান্ট থেকে প্রায় 1,496 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেত, কিন্তু এখন তা 700 মেগাওয়াটে নামিয়ে আনা হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে এই ঘাটতির কারণে বাংলাদেশকে বড় সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
আদানি পাওয়ার গত ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডকে (পিডিবি) চিঠি দিয়ে অক্টোবরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের আল্টিমেটাম দিয়েছিল। এতে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সব বকেয়া বিল পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ৩১ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও চিঠিতে সতর্ক করা হয়েছে। এই আল্টিমেটামের কারণে বাংলাদেশকে যত দ্রুত সম্ভব সমাধান বের করতে হবে।
পরিশোধে বাধার কারণে বকেয়া বেড়েছে। আগে PDB সপ্তাহে প্রায় 18 মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করত, যেখানে এখন এই পরিমাণ বেড়ে হয়েছে 22 মিলিয়ন ডলারে। এ কারণে অর্থ পরিশোধে বিলম্ব হচ্ছে এবং বকেয়া বাড়ছে। এ ছাড়া ডলারের ঘাটতিও ব্যাংকিং প্রক্রিয়ায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কয়লার দাম বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি
আদানি পাওয়ার এর আগে এক বছরের জন্য একটি সহায়ক চুক্তি করেছিল, যেখানে কয়লার দামে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। এই চুক্তি শেষ হওয়ার পর আবারও বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। আদানি তার পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (পিপিএ) অনুযায়ী ইন্দোনেশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার কয়লার দামের উপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারণ করেছে। এই পরিবর্তনের ফলে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে, পিডিবির জন্য তার বকেয়া পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে চিঠি দিয়েছেন। এ চিঠিতে বকেয়া টাকা যত দ্রুত সম্ভব পরিশোধের জন্য আবেদন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিষয়টি দেখছেন। আদানির এই পদক্ষেপ থেকে স্পষ্ট যে তিনি তার বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে গুরুতর।
আদানী পাওয়ারের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের কারণে বাংলাদেশে 1,600 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং জনগণকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পিডিবি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সমস্যাটি সমাধান করার চেষ্টা করছে যাতে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে।
Facebook Comments