অ্যাঙ্কর থেকে অ্যাক্টর, কেমন এই জার্নি টা?
আমার প্রথম কাজ অভিনেতা হিসেবেই। তবে তা ছিলাম চাইল্ড আর্টিস্ট। তখন বয়স ৫ বা ৬ হবে। অঞ্জন চৌধুরীর “সংঘর্ষ”তে প্রথম কাজ করি। তারপর সেই কাজ চলতে থাকে। কখনও বুম্বা দার ছোটবেলার চরিত্রে। কখনও লাঠি, মুখ্যমন্ত্রী, আব্বাজান। নিজেকে কোন ভাবেই এক ছকে বেঁধে ফেলতে পারিনি। তারপর একটা সময় ছিল আমি এই কাজ করতে পারিনি। বয়সটাই এমন ছিল। যখন ফিরি তখন অ্যাঙ্কর হিসেবে। দশ মিনিটের খেল একটা স্পোর্টস অনুষ্ঠানের অ্যাঙ্কর ছিলাম। তারপর সারেগামাপা। টেলিভিশন করেছি বহুদিন। বন্ধন, নীড় ভাঙা ঝড়। তবে সেই অর্থে এখন কিছুটা স্টেবল। বেশির ভাগই কাজ সিনেমায়।
মুম্বাইতে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
মুম্বাইতে খুব বেশি কাজ করিনি। একটা ছবিই করেছি। তবে অভিজ্ঞতা খুব ভালো। “কুছ ভিগে আলফাস”। এই ছবিতে আমার কাজ। মুম্বাই ভীষণ প্রফেশনাল। বাজেটের দিক থেকে বেশ কিছুটা এগিয়ে। ওদের প্রোডাকশন, প্রি-প্রোডাকশন সত্যি অসাধারণ। হিন্দি ছবির সঙ্গে বাংলা ছবির কোন তুলনা হয়না।
হিন্দি বাংলা, টেলিভিশন সব কিছু তো ছিলই। তুমি কিছু দিন আগেই করলে “নাদ” এই রকম একটা প্রেজেন্টেশনের ভাবনা কিভাবে এলো?
দুই ধরনের অভিনয়ের মানুষ আছে। শুধু অভিনয় নয় সব দিক থেকে। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের স্ট্রং পয়েন্ট টা জানে। তারা চায় সেই জায়গাতেই থাকতে। আর কেউ আছে নতুন কিছু করতে চায় সব সময়। একটা সময় অ্যাঙ্কারিং করেছি অভিনয় করেছি, থিয়েটার করছি। “নাদ” হল এমন এক প্রেজেন্টেশন যেখানে নিজেকে নতুন ভাবে খুঁজে বের করতে চেয়েছি।
কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছে “বারান্দা”। যাদের সঙ্গে কাজ করেছে ক্যামেরা পিছনে তাদের কিছু ঘটনা যদি বল।
যাদের সঙ্গে কাজ করেছি তারা প্রত্যেক মুহূর্তে শিখিয়েছে। একজন থিয়েটারের আরেকজন টেলিভিশন। দেখতাম ব্রাত্য দা শটে ঋতু দিকে টেক্কা দিতে চাইছে, আর ঋতু দি তাঁর কাউন্টার অ্যাটাক করছে। অভিনয় যে তাদের শরীরে কি ভাবে রয়েছে তা না দেখলে বোঝান যায়না। সেই কারণেই এইরকম একটা যুগলবন্দী পেল দর্শকরা।
তোমার কি মনে হয় অভিনেতাদের থিয়েটার করা দরকার?
থিয়েটার করা দরকার নয় প্রয়োজন। ধর বছরে আমি চার-পাঁচটা ছবি করলাম, কিন্তু তাছাড়া আর অভিনয় কোথায়? অভিনয়কে যত প্র্যাকটিস করবে তত তা বেরোবে। যারা টেলিভিশন করেন তারা না হয় একটা সুযোগ পান। কিন্তু যারা তা করেন না তাদের অবশ্যই প্রয়োজন থিয়েটার করার। যখন আমি ‘খাদ’-এর শ্যুটিং-এর সময় কমল দাকে বলেছিলাম থিয়েটার করলে জানাতে, কমল দা দাকে, আমি সোহিনীকে ডাকি, এই ভাবে চেন তৈরি হয়। ফলে “অবয়ব” ও খুব ভালো করছে। কিছুদিনের মধ্যেই ব্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠান আছে।
পরপর অনেক গুলো কাজ করছ, কোন গুলো নিজের কাছে যত্ন করে তুলে রাখছ বলতো?
সব অভিনেতার কাছেই সব অভিনয়ই রেখে দেওয়ার মত হয়। তবে দুটো ছবির কথা বলতে হবে।
মুখোমুখি- কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এর ছবি। রয়েছেন যীশু দা, অঞ্জন দত্ত, গার্গী রায়চৌধুরী, আমার বিপরীতে রয়েছে দর্শনা। আরেকটা হল অস্কার, পার্থপ্রতিম মান্না। সিমেয়ার মধ্যে রয়েছে অন্য গল্প। ট্রেলারটা দেখলাম। ফিডব্যাক বেশ ভালো।
এখনও স্ট্রাগল করতে হয়?
স্ট্রাগল তো সব সময় করতে হয়। আগে এই জায়গায় আসার জন্য লড়াই করতে হত। এখন আরও ভালো করার জন্য লড়াই। স্ট্রাগল আছে বলেই তো মানুষ আমরা। নতুন কিছু করার খিদে রয়েছে। এটা না থাকলে তো মানুষই থাকত না।
স্বপ্নের চরিত্র কি?
সত্যি কথা বলতে স্বপ্নের চরিত্র বলতে একজন ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। যাতে সকলে অবাক হয়। এই ছেলেটা তো চকোলেট বয় ছিল, মিষ্টি মিষ্টি হিরোর ভুমিকায় অভিনয় করত। সেই জায়গা থেকে একজন যে কিনা ভিলেন। যেটা মানুষের মনে ছাপ ফেলে যাবে।
Photograph by- Koyel Paul
Facebook Comments