বাংলাদেশে ৯৫ টি ছবি করে ফেলার পর পরিচালক সুবীর মন্ডলের ছবি ‘শর্টকাট’ দিয়ে টলিউডে নিজের কেরিয়ার শুরু করছেন বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। বাংলাদেশে অপুর প্রত্যেকটা ছবিই কমার্শিয়াল হলেও কলকাতাতে একটু অন্য ধারার ছবি দিয়েই নিজের ইনিংস শুরু করছেন তিনি। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, গৌরব চক্রবর্তী অভিনীত এই ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে অপুকে। এই ছবির হাত ধরেই টলিউডে নিজের জায়গা পাকা করার কথা ভাবছেন অভিনেত্রী। ওপার বাংলার ন্যায় এপার বাংলার দর্শকরা পর্দায় অপুকে কেমন ভাবে নেবেন সেটা সময়ই বলবে। তবে তার আগে শুটিং-এ এই ছবি নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী দেখাল অপুকে।
কলকাতায় প্রথম বার কাজ করে কেমন লাগছে ?
প্রশ্নের উত্তরে ছবির শুটিং এর মাঝেই অপু জানালেন, “এখানে কাজ করতে এসে আমার মনেই হচ্ছে না যে আমি বাংলাদেশের বাইরে এসে কাজ করছি। আসলে আমাদের এই ইউনিটের সবাই আমাকে এতটা সাহায্য করছে যে আমার মনে হচ্ছে আমি বাংলাদেশেই বসে কাজ করছি। আমি সত্যিই খুব লাকি যে কলকাতায় আমার প্রথম ছবিতেই এত ভালো একটা ইউনিটের সাথে কাজ করতে পারছি”।
বাংলাদেশে অপুর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। এই বাংলার মানুষও অনেকটা পরিচিত অপুর সাথে।
কিন্তু যেখানে সবাই চায় বড় কোন প্রোডাকশন হাউসের ব্যানারে এবং বড় পরিচালকের সাথে নিজের কেরিয়ারের ডেবিউ করতে, সেখানে আপনি কলকাতাতে আপনার প্রথম কাজেই কেন একজন নতুন পরিচালকের সাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিলেন ?
জবাবে অপু জানালেন, “আসলে আমি সবসময় এটা মনে করি যে, যারা প্রথম কাজ করে তাদের মধ্যে নিজেদেরকে প্রমাণ করার খিদেটা প্রবল ভাবে থাকে। তাই তারা তাদের একশো শতাংশ দিয়ে ছবিটা তৈরি করে। একটা ছবি সফল হতে গেলে যেটা খুব জরুরী”।
দুই বাংলার সিনেমার কাজে কতটা তফাৎ রয়েছে ?
অপু বলেন, “দুই বাংলার কাজের মধ্যে খুব একটা বেশি পার্থক্য রয়েছে বলে আমি মনে করিনা। ওপার বাংলা এবং এপার বাংলা দু-জায়গাতেই কাজের ধরন মোটামুটি একই। তবে ছোট্ট একটা পার্থক্য রয়েছে। আমার মনে হয়, এখানে সবাই কাজের প্রতি খুব বেশি কমিটেড। নির্দিষ্ট কলটাইমের মধ্যেই দেখি সবাই শুটিং লোকেশনে পৌঁছে যায়। এই জায়গাটায় বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রি এখনো একটু পিছিয়ে আছে বলে আমি মনে করি”।
বাংলাদেশের অনেক নায়িকাই এখন কলকাতাতে চুটিয়ে কাজ করছেন। জয়া এহসান তাদের মধ্যে অন্যতম। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতো এখানেও অপুর সাথে জয়ার পর্দায় রেষারেষির একটা সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে কী ?
সে সম্ভাবনাকে হেসে উড়িয়ে দিয়ে নায়িকা জানালেন, “আসলে বাংলাদেশে কোনকালেই জয়া আপুর সাথে আমার পর্দায় কোন প্রতিযোগিতা ছিল না। আমি মূলত কমার্শিয়াল ছবিই করি। সেখানে জয়া আপু মাত্র দুটো কমার্শিয়াল ছবি করেছে। তাই পর্দায় যুদ্ধ করার মতো পরিস্থিতি কখনো তৈরি হয়নি। আর আমি প্রতিযোগিতা পছন্দও করিনা। প্রতিযোগিতাতে কাউকে না কাউকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় হতেই হয়। এখানে সবাই তো নিজের । আর যাদের সাথে প্রতিযোগিতা করব তারা সবাই তো একেবারে কাছের মানুষ। আমি মনে করি প্রতিযোগিতার থেকে মেধা দিয়ে কাজ করলে সেটার মর্যাদা অনেক বেশি”।
তাহলে কী এবার বাংলাদেশ ছেড়ে কলকাতাতেই পাকাপাকিভাবে আস্তানা গাড়তে চলেছেন অপু ?
অপু অবশ্য তা নিয়ে এখনই কিছু ভাবছেন না। তিনি বললেন, “এখনই এ নিয়ে কিছু ভাবছি না। আমি অপেক্ষা করে আছি আমার প্রথম ছবিতে দর্শকদের কী প্রতিক্রিয়া হয় সেটা দেখার জন্য। আসলে বাংলাদেশে আমি যথেষ্ট পরিচিত হলেও এখানে তো এখনো আমার সেভাবে কোন পরিচিতি নেই। যদিও এই বাংলার বেশ কিছু মানুষ আমার খুব বড় ফ্যান। তাই আমি দেখতে চাই আমার প্রথম ছবিটাকে দর্শক কীভাবে নেয়। তার ওপরেই আমি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। তবে আমি আরও অনেক ভালো কাজ দুই বাংলার দর্শকদেরই উপহার দিতে চাই”।
কলকাতার দর্শকদের ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানালেন অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। তিনি কি বললেন শুনে নিন তার মুখেই
ছবি – কোয়েল পাল
Facebook Comments