ইকবাল খন্দকার। বাংলা সাহিত্যের একজন পরিচিত মুখ। বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকাতে অনেকদিন ধরেই নিয়মিত লিখে আসছেন। প্রতি বছরের বইমেলাতে প্রকাশিত হয় তার দশটি করে বই। শুধু প্রকাশ নয়, পাঠকপ্রিয়তার দিক থেকেও এগিয়ে থাকে তার লেখা বইগুলো। ভক্তদের ধারণা ভবিষ্যতের বাংলা সাহিত্যে যারা নেতৃত্ব করবেন তাদের মধ্যে প্রথম সারিতে থাকবেন ইকবাল খন্দকার। লেখক সত্ত্বার বাইরে তার আরো দুটি পরিচয় রয়েছে। আর তা হল উপস্থাপক এবং গীতিকার। তার লেখা শ্রোতাপ্রিয় গানগুলোর অন্যতম ‘ভালোবাসি হয়নি বলা তবু ভালোবাসি…’ গানটি। তবে সবকিছুর বাইরে তিনি একজন কেয়ারিং স্বামী এবং আদর্শ বাবা। হোয়াটস নিউ লাইফের পাঠকদের জন্য আজ থাকছে লেখক ইকবাল খন্দকারের সাক্ষাৎকার।
কেমন আছেন?
জি, অনেক ভালো আছি।
আপনার প্রথম প্রকাশিত বইয়ের নাম কী? কত সালে প্রকাশিত হয়?
আমার প্রথম প্রকাশিত বইয়ের নাম ‘ভুলে যেও আমায়’। প্রকাশিত হয়েছিল ২০০১ সালে।
আপনার জন্ম কোথায় ?
আমার জন্ম নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার ভাবলা গ্রামে।
লেখালেখিতে কেন এলেন?
মনের টানে।
আপনার লেখালেখির পেছনে কার অবদান বেশি ?
লেখালেখি যখন শুরু করি, তখন সেভাবে কারো অনুপ্রেরণা পাইনি। তবে বিয়ের পর আমার স্ত্রীর অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। তার এই অনুপ্রেরণা আমার লেখালেখিতে অনেক বড় অবদান রাখছে।
বাংলাদেশের সাহিত্য নিয়ে আপনার মতামত জানতে চাই…
লেখালেখি তথা সাহিত্য নিয়ে এদেশের তরুণদের যে উন্মাদনা, এটা আমি খুব আন্তরিকভাবে উপভোগ করি। তরুণদের এই উন্মাদনা যতদিন অবশিষ্ট থাকবে, ততদিন এদেশের সাহিত্য সতেজ এবং প্রাণবন্ত থাকবে।
সাহিত্যের কোন শাখা নিয়ে আপনার লিখতে ভালো লাগে?
সাহিত্যের সব শাখা নিয়ে লিখতেই আমার ভালো লাগে। ছড়া, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে কবিতা ইচ্ছে করেই লিখি না। আর সায়েন্স ফিকশন পড়তেও ভালো লাগে না, লিখতেও ভালো লাগে না।
একজন লেখক হিসেবে আপনি কেমন বইমেলা প্রত্যাশা করেন?
যে বইমেলায় উদ্দাম হেঁটে বেড়ানো যায়, যে বইমেলা থেকে বাড়ি ফিরতে সামান্যতম ভয় লাগবে না, আমি এমন বইমেলা চাই।
শুধু বইমেলা কেন্দ্রিক বই প্রকাশনাকে আপনি কীভাবে দেখেন?
এটা মোটেই ভালো লক্ষণ না। তবে পাঠক যদি বই পড়ে, বই কেনে, তাহলে প্রকাশকরা সারাবছর বই প্রকাশ করতে বাধ্য। অর্থাৎ পাঠক বাড়লে বছরজুড়েড় বই প্রকাশও বাড়বে।
লেখক এবং প্রকাশকের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত?
বন্ধুর চেয়েও বেশি। কারণ, এই দুজনের সম্পর্কের মধ্যে সামান্যতম ফাঁক ফোকর বা দূরত্ব থাকলে ভালো বই আলোর মুখ দেখবে না। বঞ্চিত হবে পুরো প্রকাশনা শিল্প।
নতুন লেখকদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
হাজারটা বাধা আসবে। কিন্তু হতাশ হলে চলবে না। লেগে থাকতে হবে। দশটা বছর লেগে থাকো, যদি সুফল না পাও, তাহলে আরো দশ বছর লেগে থাকার প্রস্তুতি নাও।
আপনার পাঠকদের জন্য কিছু বলুন…
আমি আমার প্রতিটা লেখা আপনাদের কথা মাথায় রেখে লিখি। সর্বোচ্চ চেষ্টা করি ভালো কিছু রাখতে আপনাদের জন্য। এবাবের বইগুলোতেও তার ছাপ পাবেন।
আপনার প্রিয় লেখকদের নাম বলুন
যখন যিনি ভালো লেখেন, তিনিই আমার প্রিয় লেখক। কারণ, আমি বিশ্বাস করি, সবার সব লেখা ভালো না, সবার সব লেখা খারাপ না।
আপনাকে যদি আলাদিনের চেরাগ দেওয়া হয় তাহলে কী করবেন?
লোডশেডিংয়ের সময় আলাদিনের চেরাগ জ্বালিয়ে আইপিএসের উপর চাপ কমাবো।
ভবিষ্যতে দেশের জন্য কী করতে চান?
আমি যখন থেকে বুঝতে শিখেছি, তখন থেকেই দেখে আসছি আমার আশপাশের মানুষগুলো নানা ছুতোয় বিদেশ চলে যেতে চাইছে। কিন্তু আমি বরাবরই বলে এসেছি, জীবনেও আমি দেশ ছেড়ে যাবো না। বেড়াতে যাওয়া সেটা ভিন্ন কথা। স্থায়ীভাবে কখনোই যাবো না। আমি দেশের জন্য কতটুকু কী করতে পারবো জানি না, তবে আজীবন এই দেশের মানুষ হয়ে থাকতে চাই।
ছবি : দীপঙ্কর দীপু
Facebook Comments