টলিউডের নতুন সঙ্গীত পরিচালকদের মধ্যে এক অন্যতম নাম হল চিরন্তন ব্যানার্জী। গান গাওয়ার পাশাপাশি চুটিয়ে সঙ্গীত পরিচালনাও করছেন। সম্প্রতি সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন পরিচালক অনিন্দ্য ব্যানার্জীর ‘ওয়াচমেকার’ ছবিতেও। এর পরেই কাজ করেছেন হরর ছবি ‘কুয়াশা যখন’ ছবিতে। এই ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করার পাশাপাশি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও তৈরি করেছেন চিরন্তন। একই সাথে সঙ্গীত পরিচালনা পাশাপাশি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক তৈরির কাজ, সবমিলিয়ে কতটা কঠিন ছিল এই জার্নি, সবকিছু নিয়ে What’s New Life এর সামনে অকপট চিরন্তন।
‘কুয়াশা যখন’ ছবিতে কাজ করার তোমার অভিজ্ঞতা কেমন ?
চিরন্তন- আসলে এই ছবিতে আমি গান ও ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দুটোই করেছি, তাই এই ছবিতে কাজ করাটা সত্যিই একটা আলাদা অনুভূতি। অনেক কথা যা ছবিতে বলা যায় না, তা গানের মধ্য দিয়ে বলে দেওয়া যায় বা অনেক সময় একটা গানের মধ্য দিয়েই ছবির গল্পটাকে অনেকটা এগিয়ে দেওয়া যায়। সেই ভাবে এই ছবির গানের জন্য ভাবনাচিন্তা করেছি। আর আমি মনে করি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এর একটা নিজস্ব ভাষা থাকে। সেই ভাষাটা ফুটিয়ে তোলাও একজন সঙ্গীত পরিচালকের কাছে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক করার সময়েও সেই বিষয়টাও মাথায় রেখেছি। সব মিলিয়ে এই ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো।
‘কুয়াশা যখন’ এর মতো হরর ছবিতে মিউজিকের কি ভূমিকা থাকছে ?
চিরন্তন- আমি টিম ওয়ার্কে প্রচণ্ড বিশ্বাস করি। সেই দিক থেকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাইবো এই ছবির দুই পরিচালক অভিষেক ও মীনাক্ষী’কে। আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে একটা ছবি হিট হয় পরিচালকের জন্য। বাকি মিউজিক, মেকআপ, সাউন্ড সব পরে আসে। তাই পরিচালক ঠিক কি চাইছেন সেটা বোঝাটা জরুরি। সেটা দুই পরিচালকের কাছ থেকেই পেয়েছি। আসে এই ধরনের প্যারানরমাল গল্প নিয়ে আগে তো খুব বেশি ছবি হয়নি। এই ছবির মধ্যে রোমান্স আছে, তার সাথে একটা ভয় আছে, থ্রিল আছে তো সেগুলোকে নিয়েই গানগুলো ভেবেছি। গানগুলো আশা করি দর্শকদের ভালো লাগবে।
পরিচালকদের সাহায্য কেমন পেয়েছ ?
চিরন্তন- আমি এর আগে অনিন্দ্য ব্যানার্জীর ‘ওয়াচমেকার’ ছবিতেও মিউজিক করেছিলাম। এই সময়েও অনিন্দ্য দা খুব সাহায্য করেছিল। এই ছবিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অভিষেক দা ও মীনাক্ষী দি’ও আমাকে খুব সাহায্য করেছে। আমার মনে হয় ছবিতে পরিচালকই শেষ কথা। যদি পরিচালকের গান ভাললাগে তাহলে আমি ভাবি যে কাজটা ঠিকঠাক হয়েছে। অভিষেক দা ও মীনাক্ষী দি আমাকে প্রচুর ছোট ছোট মিউজিকের ক্লিপিংস পাঠিয়েছিল। আমরা অনেক বার আলোচনায় বসেছি ছবির গান নিয়ে। সবমিলিয়ে দুজনেই আমাকে খুব সাহায্য করেছে।
এই ছবির গান ও ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক তৈরি করতে তোমার কত সময় লাগল ?
চিরন্তন- এই ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক আমার ১৫ দিনের মধ্যে রেডি হয়ে গিয়েছিল। গানের ক্ষেত্রে একটু বেশি সময় লেগেছিল। আসলে রুপঙ্কর দা এই ছবিতে একটি গান গেয়েছে। রুপঙ্কর দা’র ডেট নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। তবে আমরা মোটামুটি তিন মাসের মধ্যে এই ছবির সমস্ত গান রেডি করে ফেলেছিলাম।
এই পুরো জার্নিটাতে এমন কিছু ঘটনা যা তুমি শেয়ার করতে চাইবে ?
চিরন্তন- প্রথমেই বলেছি এই ছবিতে কাজ করার আমার অভিজ্ঞতা দারুণ। সেই রকম বিশেষ কোন ঘটনা নেই। তবে আমি একটা কথা বলব, এই ছবির গানে আমরা কিছু আলাদা বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করেছি। যেগুলো এখন সচরাচর হয়না। কিন্তু আমরা আলাদা কিছু করার চেষ্টা করেছি।
এই ছবিতে মোট কটি গান রয়েছে ?
চিরন্তন- মোট চারটি গান রয়েছে। তবে ছবিতে তিনটি গান রয়েছে। একটি গান অ্যালবামে রয়েছে।
ছবির মিউজিক কবে মুক্তি পাচ্ছে?
চিরন্তন- জুলাইয়ের শেষের দিকেই হওয়ার কথা। ৩১শে আগস্টে ‘কুয়াশা যখন’ মুক্তি পাবে। সেই হিসেবেই মোটামুটি এক মাস আগে মানে এই মাসের শেষেই ছবির মিউজিক মুক্তি পাবে।
ইন্টারভিউ এর শেষে চিরন্তন জানালেন, আসলে এই ইন্ডাস্ট্রিতে সবাই কিছু না কিছু কপি করেই এগিয়ে যেতে চায়। আমার মনে হয় প্রত্যেক্যের একটা নিজস্ব ধারা থাকা উচিত। আমি খুশি যে এই ছবিতে আমরা সেই কাজটা করে দেখিয়েছি। এই ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা সত্যিই ভোলার নয়।
ছবি- কোয়েল পাল
Facebook Comments