RJ এই শব্দটা তোমার কাছে কি?
অ্যাঙ্কারিং করতেই যাচ্ছিলাম। অ্যাঙ্কারিং তো মজাতেই করতাম। ওতে হাত খরচ তো উঠেই যেত। তাতেই খুশি ছিলাম। অনেক ছোট থেকেই কাজ করি। যখন এইচএস পাশ করি তখন থেকেই খেয়াল ছিল পাশ করলেই কোনও একটা বিপিও খুঁজে বের করতে হবে। সেসব খুঁজেও নিয়ে ছিলাম। শেষপর্যন্ত যখন এই Red FM RJ-এর সুযোগ আসে, ভেবে ছিলাম, শুরু তো করি। আসলে তখন এই প্রফেশনটা এখনকার মত ছিল না। তখন যদি কাউকে বলা হত RJ তাহলে সে বলত, আচ্ছা আর কি কর? ফলে আমিও ব্যাপারটা নিয়ে জানতাম না কতটা ভবিষ্যৎ আছে এই প্রফেশনে। পরে শ্রদ্ধা বাড়ল এই কাজে। সবার খারাপ সময় আসে, সেইখান থেকে হাসি মুখে অন্যদের খুশি করা, এটা মোটেই সহজ কাজ নয়।
এখন এই প্রফেশনটা কতটা পাল্টেছে?
এখন ভাল লাগছে, স্কুলে স্কুলে বিজ্ঞাপন হচ্ছে, এখন মানুষ RJ হতে চাইছে। এটাকে কেরিয়ার করার কথা ভাবছে। এতে রেডিওর জয়।
প্রথম মাইক, অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
মাইকটা জানতামই। কিন্তু RJ হিসেবে মাইক, তার অভিজ্ঞতা একদমই আলাদা। কিছু সময় কেটেছে ট্রেনিং পিরিয়ডে। তখনও জানতামনা সবকিছু। কানে হেডফোন। সাধারণ মানুষ যা করে আমিও তাই করি। চেঁচিয়ে কথা বলতাম। প্রথম দু দিন ভেবেছিলাম আমার RJ হওয়া হল না। সবটা আয়ত্তে আনতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছিল। ভাল লেগেছিল প্র্যাকটিস চলাকালীন যখন সবাই বলেছিল, আরে ভাল হচ্ছে, করতে পারবি।
সারাদিন প্রচুর কথা বলতে হয়, সবসময় কি স্ক্রিপ্টেড থাকে?
প্রচুর নয়, সঠিক কথা বলতে হয়। কম কথা বল কিন্তু সঠিক কথা। মানুষ যা শুনছে তা কতটা মন ছুঁয়ে যাচ্ছে। না সবসময় স্ক্রিপ্টেড হয় না। কিছুক্ষেত্রে সময়ের উপর ছাড়তে হয়। আবার কিছু সময় একটু পড়াশোনা করে নিতে হয়। বাকি সময় যেকোনো RJ যা সে তার মত করে বলতে থাকে।
যখন ফোন কল আসে, অনেকে ফোন করে অনেক রকম কথা বলে, ম্যানেজ কর কি ভাবে?
সেটা অভিজ্ঞতা। যেমন ধর, তুমি আমার সঙ্গে যে ভাবে কথা বলবে, আমিও তাই ভাবেই উত্তর দেব। রেডিও এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যেখানে তুমি অনেকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবে। তেমনই তুমি শিখবে কি ভাবে কথা বলতে হয়। এই ব্যাপারটা হয়ে যায়। কলারসদের চাহিদা খুব বেশি কিছু নয় কিন্তু, ভাল গান। আর বন্ধু। ব্যাস তাহলেই খুশি। দুজন মানুষ না দেখেও বন্ধু ভাবা, এটা ভেবে কথা বললে সব হয়ে যায়।
আরজে হিসেবে ভাল ঘটনার সাক্ষী হয়েছ?
হ্যাঁ, অনেক হয়েছে। যেমন ধর দুজন মানুষের সঙ্গে রেডিওর মারফতই চেনা হয়েছিল। পরে শুনলাম, তারা একসঙ্গে থাকে। খুশি হলাম। জানলাম তাদের বিয়ে হয়েছে। আবার তেমনই মাশালা নাইটস যে অনুষ্ঠানটি করি তাতে, কনফেশ করার জায়গা থাকে, একেক সময় কনফেশন শুনে মনে হয় কত বড় সমস্যায় মানুষ আছে। রাত্রে যখন বাড়ি ফিরি আমি কিন্তু এইগুলো নিয়েই যাই। অবাক হয়ে যাই একেক জনের কথা শুনে। কত বার এমন কল এসেছে, “বিয়ে করেছি কিন্তু বাড়িতে জানাতে পারিনি”। অফিসে যাচ্ছে বলে বউ-এর কাছে যাচ্ছে। বাড়ির থেকে খেয়ে বেড়িয়েছে। কিন্তু বউ-এর কাছে গিয়েও খেতে হয়েছে। জীবনের পার্ট এইগুলো।
ছবি সৌজন্যে – WNL
Facebook Comments