র্যাগিংয়ের যে অভিযোগ উঠেছিল সেটাই সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে। আর ব়্যাগিংয়ের কারণেই প্রথম বর্ষের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিতে। তাঁরা মেনেই নিলেন র্যাগিংয়ের জেরেই ছাত্রমৃত্যু ঘটেছিল।
যদিও ঘটনার পর অনেকেই এই অভিযোগ মেনে নিতে চাননি। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার প্রায় ৯ মাস পর শাস্তি পেতে চলেছেন প্রায় ৩৮ জন অভিযুক্ত। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল। কিন্তু তৎকালীন অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে সরিয়ে দেওয়ায় তা থমকে যায়। গত ২২ এপ্রিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য পদে আসেন ভাস্কর গুপ্ত। তিনি শুক্রবার কর্মসমিতির বৈঠক ডাকেন। আর সেখানেই সিলমোহর পড়ল।
এই নিয়ে এখন ভোটের মরশুমেরও জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে ভাস্কর গুপ্ত বলেন, ‘ওই ছাত্রের জন্য আমরা কিছুই করতে পারিনি। এখন অন্তত কিছু করা কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। শাস্তির সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। দেশের আইনকানুন তো আমাদের হাতে নেই। আমাদের পক্ষ থেকে যা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সবই গ্রহণ করা হয়েছে।’ এখানে বেশ কয়েকজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং কিছু ছাত্রকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। জেলে আছে অভিযুক্ত অনেকেই। ২৫ জনকে ১ সেমেস্টার তথা ছয়মাসের জন্য সাসপেন্ড করা এবং হস্টেল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তই গৃহীত হয়েছে কর্মসমিতির বৈঠকে।
এদিকে রুদ্র চট্টোপাধ্যায় নামে পড়ুয়াকে এক মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হবে। এভাবে এই বিপুল পরিমাণ ছাত্রকে সাসপেন্ড এবং বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তে কর্মসমিতি সিলমোহর দিয়েছে। তাই শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা রইল না। আবার এদিনই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় সিন্ডিকেট বৈঠক। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটিউটে ১৬ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত গরমের ছুটির কথা বলা আছে। রাজ্যে চলা তীব্র দাবদাহের জেরে এই বছর নির্ধারিত সময়ের আগেই ১০ দিন ছুটি দেওয়া হয়েছিল। তাই অধীনস্ত কলেজগুলিকে একটি অ্যাডভাইজারি পাঠানো হবে। তাতে ৬ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ক্লাস নেওয়ার কথা বলা হবে।
অন্যদিকে এবার থেকে বিনামূল্যে প্রবেশ করা যাবে মিউজিয়ামে। আবার স্নাতক স্তরের ফি কাঠামোতেও কিছু সংশোধন করা হয়েছে। যদিও এই সিন্ডিকেট বৈঠক স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চশিক্ষা দফতর। তারপরও এই বৈঠক হওয়ায় জোর চর্চা শুরু হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছিল, এই বৈঠকের আলোচ্য বিষয়গুলির মধ্যে কোনওটি ছাত্র স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ কি না সেটা বিবেচনা করা সম্ভব নয়। এই বৈঠক করার জন্য দফতরের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়নি। স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় দফতরের অনুমতি ছাড়া বৈঠক করলে তা আইনলঙ্ঘন করা হবে বলেও জানানো হয়েছিল। তারপরও বৈঠক হল।স্মৃতিতে। সেই প্রস্তাবেই সিলমোহর পড়ে।
Facebook Comments