প্রায় ৪ বছর ধরে মঙ্গলের মাটিতে এর গঠন প্রকৃতি নিয়ে অনুসন্ধান শেষে নাসার ইনসাইট ল্যান্ডার চলতি গ্রীষ্মে অবসর নিতে যাচ্ছে। ল্যান্ডারের সৌর প্যানেলে মঙ্গলের ধুলোয় ঢেকে যাওয়ায় এর শক্তি হ্রাস পাচ্ছে।- খবর বাসস। ২০১৮ সালের ৫ মে ইনসাইট ল্যান্ডার মঙ্গলে যাত্রা করে এবং ২৬ নভেম্বর এটি মঙ্গলে অবতরণ করে। এর আনুষ্ঠানিক মেয়াদ গত ১৮ মে শেষ হলেও এটি এখনো সক্রিয় আছে। সৌর প্যানেল ধুলোয় ঢেকে যাওয়ায় শক্তি ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। পাওয়ার সংরক্ষণ ব্যাটারিও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে। যদিও এই ল্যান্ডার বিশ্বের বিজ্ঞানীদের জন্য বিপুল ডাটা সংগ্রহ করে পাঠিয়েছে, বহু বছর ধরে এই তথ্যের ওপর গবেষণা চলবে। এই প্রোবের পাঠানো তথ্য গ্রহের গঠন প্রকৃতি বুঝতে সহায়ক হবে। মঙ্গলবার (১৭ মে) নাসা ইনসাইট ল্যান্ডারের এই আসন্ন সমাপ্তির কথা জানায়।
ফ্রান্সের তৈরি আলট্রা-সেনসিটিভ সিসমোমিটারে সজ্জিত এই ইনসাইট ল্যান্ডার এ পর্যন্ত মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠে ১,৩০০ এর বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড করেছে। এর মধ্যে গত ৪ মে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করেছে। তবে জুলাই নাগাদ সিসমোমিটার বন্ধ হয়ে যাবে। ল্যান্ডারটির শক্তিস্তর এখন দিনে একবার নেয়া হবে এবং কিছু পরীক্ষা করা হবে। ছবি এখনো পাওয়া যেতে পারে। এরপর ২০২২ সালের শেষ নাগাদ মিশন পুরোপুরি শেষ হবে। ল্যান্ডারটির দুটো সোলার প্যানেল রয়েছে, প্রতিটি প্রায় ৭ ফুট প্রশস্ত। প্রায় চার বছর ধরে মঙ্গলের মাটিতে এই সোলার প্যানেল ধুলোয় ঢেকে গেছে। ইনসাইট এখন তার শক্তির ১০ ভাগের এক ভাগ মাত্র ব্যবহার করছে। শিগগিরই এর ব্যাটারি নিঃশেষিত হয়ে যাবে।
মঙ্গলে ল্যান্ডারে ধুলোর আস্তরণ জমা হওয়া সম্পর্কে নাসার বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল। রোবোটিক বাহু দিয়ে সৌর প্যানেলের ধুলো সরানোর কারণে ল্যান্ডারটি নতুন করে এক বছরের জন্য আয়ু ফিরে পায়, ছয়বার এই ধুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলের মাটিতে বর্তমানে চারটি মিশন রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পারসিভিয়ারেন্স ও কিউরিসিটি। চীনের ঝুরঙ এবং নাসার ইনসাইট ল্যান্ডার। সবগুলোই ২০১৮ সাল থেকে মিশনে রয়েছে। ইনসাইট ল্যান্ডার মঙ্গলের গঠন ও ভূস্তর সম্পর্কে আরও নতুন তথ্য জানার সুযোগ করে দিয়েছে, যা আগের অনেক ধারণা পাল্টে দিয়েছে।
Facebook Comments