হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি (৬৩) ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ এসব নেতা নিহত হওয়ার পর সন্দেহের তির ইসরায়েলের দিকে। তবে, এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে ইসরায়েল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা রাইসি নিহতের ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা কথা অস্বীকার করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘এই দুর্ঘটনায় আমরা জড়িত না।’
https://x.com/FarsNews_Agency/status/1792394174815473958?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1792394174815473958%7Ctwgr%5Efde037a702dab7a6e6b603908704e4e867853f3e%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Fnavbharattimes.indiatimes.com%2Fworld%2Fuae%2Febrahim-raisi-dead-in-helicopter-crash-rescue-team-found-location-of-iranian-president-chopper%2Farticleshow%2F110259794.cms
রাইসি ইরানের কট্টরপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার নেতৃত্ব ১৯৮৮ সালে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। তার নেতৃত্বেই ইরানের সামরিক বাহিনী কিছুদিন আগে আঞ্চলিক বৈরীতার জের ধরে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
রোববার (১৯ মে) ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এক পার্বত্য অঞ্চলে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাইসিসহ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নিহতের ঘটনা ব্যাপক জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এই দুর্ঘটনাকে ঘিরে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, রাইসির মৃত্যুর রহস্য।
যদিও ইরানের সরকারি ব্যাখ্যায় এখন পর্যন্ত বৈরী আবহাওয়া কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম বলছে, ভারী বৃষ্টিপাত আর ঘন কুয়াশার কারণে ফ্লাইটের দৃষ্টিসীমায় ব্যাঘাত ঘটেছে। তবে, এই দুর্ঘটনায় শত্রুপক্ষের জড়িত থাকার আশঙ্কা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। তাতে সবার আগে আসছে ইসরায়েলের নাম।
ইসরায়েল কি আসলেই জড়িত? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বের হয়ে এসেছে কিছু কারণ। ব্রিটিশ প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাইসির নিহতের ঘটনায় কিছু ইরানি ইসরায়েলকে সন্দেহ করছেন। কেননা, দামেস্কে ইসরায়েলের একজন ইরানি জেনারেলকে হত্যা ও পরবর্তীতে ইসরায়েলে ইরানের শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনায় রাইসির ভূমিকা ছিল।
এই সূত্র ধরে রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে অনেকেই যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। সন্দেহ করা হচ্ছে ইসরায়েলের দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে। চোরাগোপ্তা এবং নিখুঁত অভিযান চালানোর জন্য ব্যাপক পরিচিতি আছে তাদের। কিন্তু, বিশেষজ্ঞরা রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় সন্দেহবাদীদের ইসরায়েলি সংশ্লিষ্টতার তত্ত্ব নাকচ করে দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, ইসরায়েলকে সন্দেহ করা স্রেফ অর্থহীন। এতে ইরানিদের উসকে দেওয়া ছাড়া বিশেষ কোনো লাভ হবে না। বরং সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে বহুগুণ। এছাড়া, ইসরায়েল কখনও কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যা করার মতো এত দূর অগ্রসর হয়নি।
তবে, দ্বন্দ্বের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ইরানে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনা এমন একটা সময় ঘটেছে; যখন আঞ্চলিক উত্তেজনা তুঙ্গে। লেবানন, সিরিয়া, ইরাক এবং ইয়েমেনজুড়ে ইরানের প্রক্সি নেটওয়ার্ক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। বিশেষ করে, ইসরায়েল এবং হামাসের চলমান যুদ্ধের মাঝে আঞ্চলিক এই পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে। ইরানের নেতৃত্ব নিয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি হলেই এসব গোষ্ঠী সংঘাতের দিকে এগোবে, এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
Facebook Comments