লিওনেল মেসি ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর এক দশকের আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে ২০১৮ সালের ব্যালন ডি’অর জিতে নিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়াট মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ।
সোমবার (০৩ ডিসেম্বর) প্যারিসের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা এক জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে বর্ষসেরা ফুটবলার হিসেবে মদ্রিচের নাম ঘোষণা করা হয়। বিশ্বসেরার সেরা তিনের তালিকায় সবাইকে অবাক করে দিয়ে বাদ পড়েন আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসি। আর পুরস্কার জয়ের পথে মদ্রিচ পেছনে ফেলেন রোনালদো ও অঁতোয়ান গ্রিজমানকে। বিশ্ব জুড়ে ক্রীড়া সাংবাদিকদের ভোটে ফরাসি সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’ এর দেওয়া পুরস্কারটি জয় করে নেন মদ্রিচ।
চলতি বছরের বর্ষসেরার সবকটি পুরস্কারই উঠেছে মদ্রিচের হাতে। এর আগে আগস্টে রোনালদো ও মিশরের মোহামেদ সালাহকে পেছনে ফেলে উয়েফার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কারটিও নিজের করে নেন মদ্রিচ। এর ঠিক পরের মাসেই এই দুজনকেই পিছনে ফেলে ‘দ্য বেস্ট ফিফা মেনস প্লেয়ার’ নির্বাচিত হন ৩৩ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। এসব পুরস্কার জয়ের পর ব্যালন ডি’অর জয় অনুমিতই ছিল। বাকি ছিল শুধু ঘোষণার।
ক্রোয়েশয়ান এই ফুটবলারের গুরুত্বপূর্ণ অবদানেই গত মৌসুমে ইতিহাসের প্রথম ক্লাব হিসেবে টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করে রিয়াল মাদ্রিদ। ক্লাবটির হয়ে গত মৌসুমে উয়েফা সুপার কাপ, স্প্যানিশ সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপাও তুলে ধরেন মদ্রিচ।
রাশিয়া বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ক্রোয়েশিয়াকে ফাইনালে তুলতে সামনে থেকেই অবদান রাখেন মদ্রিচ। জেতেন আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ‘গোল্ডেন বল’।
সেরা ত্রিশ:
প্রথম: লুকা মদ্রিচ (রিয়াল মাদ্রিদ, ক্রোয়েশিয়া)
দ্বিতীয়: ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো (রিয়াল মাদ্রিদ/ইউভেন্তুস, পর্তুগাল)
তৃতীয়: অঁতোয়ান গ্রিজমান (আতলেতিকো মাদ্রিদ, ক্রোয়েশিয়া)
চতুর্থ: কিলিয়ান এমবাপে (পিএসজি, ফ্রান্স)
পঞ্চম: লিওনেল মেসি (বার্সেলোনা, আর্জেন্টিনা)
ষষ্ঠ: মোহামেদ সালাহ (লিভারপুল, মিশর)
সপ্তম: রাফায়েল ভারানে (রিয়াল মাদ্রিদ, ফ্রান্স)
অষ্টম: এদেন আজার (চেলসি, বেলজিয়াম)
নবম: কেভিন ডি ব্রুইনে (ম্যানচেস্টার সিটি, বেলজিয়াম)
দশম: হ্যারি কেইন (টটেনহ্যাম হটম্পার, ইংল্যান্ড)
একাদশ: এনগোলো কঁতে (চেলসি, ফ্রান্স)
দ্বাদশ: নেইমার (পিএসজি, ব্রাজিল)
ত্রয়োদশ: লুইস সুয়ারেস (বার্সেলোনা, উরুগুয়ে)
চতুর্দশ: থিবো কোর্তোয়া (চেলসি/ রিয়াল মাদ্রিদ, বেলজিয়াম)
পঞ্চদশ: পল পগবা (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ফ্রান্স)
ষোড়শ: সের্হিও আগুয়েরো (ম্যানচেস্টার সিটি, আর্জেন্টিনা)
যৌথভাবে সপ্তদশ: করিম বেনজেমা (রিয়াল মাদ্রিদ, ফ্রান্স), গ্যারেথ বেল (রিয়াল মাদ্রিদ, ওয়েলস)
যৌথভাবে উনবিংশ: রবের্তো ফিরমিনো (লিভারপুল, ব্রাজিল), ইভান রাকিতিচ (বার্সেলোনা, ক্রোয়েশিয়া) ও সের্হিও রামোস (রিয়াল মাদ্রিদ, স্পেন)
যৌথভাবে ২২তম: এদিনসন কাভানি (পিএসজি, উরুগুয়ে), সাদিও মানে (লিভারপুল, সেনেগাল) ও মার্সেলো (রিয়াল মাদ্রিদ, ব্রাজিল)
যৌথভাবে ২৫তম: আলিসন (রোমা/লিভারপুল, ব্রাজিল), মারিও মানজুকিচ (ইউভেন্তুস, ক্রোয়েশিয়া) ও ইয়ান ওবলাক (আতলেতিকো মাদ্রিদ, স্লোভেনিয়া)
২৮তম: দিয়েগো গদিন (আতলেতিকো মাদ্রিদ, উরুগুয়ে)
যৌথভাবে ২৯তম: ইসকো (রিয়াল মাদ্রিদ, স্পেন) ও উগো লরিস (টটেনহ্যাম হটস্পার, ফ্রান্স)
উল্লেখ্য, এর আগে ফিফার বর্ষসেরা ও ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর ব্যালন ডি’অর পুরস্কার আলাদাভাবে দেওয়া হতো। তবে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছয় বছর দুটি পুরস্কার এক সঙ্গে দেওয়া শুরু হয়। তবে ২০১৬ সাল থেকে আবারও তারা আলাদা হয়ে যায়।
Facebook Comments