শনিবার সকালে পাকিস্তানের কোয়েটা রেলওয়ে স্টেশনে বিস্ফোরণে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। পাকিস্তানের মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, জঙ্গি গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) হামলার দায় স্বীকার করেছে।
বিএলএ মুখপাত্র বলেছেন, আত্মঘাতী হামলাটি মজিদ ব্রিগেড ইউনিট করেছে। তাদের টার্গেট ছিল জঙ্গি পদাতিক স্কুলের সৈন্যরা, যারা কোর্স শেষ করে জাফর এক্সপ্রেসে পেশোয়ার যাচ্ছিল।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আহত যাত্রীদের অনেকেই হাসপাতালে মারা গেছেন। কোয়েটা সিভিল হাসপাতালের মুখপাত্র ওয়াসিম বেগ পাকিস্তানি সংবাদপত্র দ্য ডনকে বলেছেন, নিহতদের মধ্যে ১৪ সেনা ও ১২ জন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।
অন্যদিকে, কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেননি যে এই হামলার পেছনে বিএলএ আছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ বলে মনে হচ্ছে।
পাকিস্তানি নিউজ ওয়েবসাইট ট্রিবিউন এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, জাফর এক্সপ্রেস প্ল্যাটফর্মে পৌঁছানোর আগেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। কোয়েটার একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ট্রেনটি সকাল ৯টায় পেশোয়ারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। দুর্ঘটনার সময় যাত্রীরা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি বলেন, বিস্ফোরণের সময় প্ল্যাটফর্মে শতাধিক লোক ছিল। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বুকিং অফিসের কাছে বিস্ফোরণটি ঘটেছে।
২৬ আগস্ট বিএলএ রেলসেতু উড়িয়ে দিয়েছে। এর পর কোয়েটা ও পেশোয়ারের মধ্যে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দেড় মাস পর ১১ অক্টোবর থেকে আবারও দুই শহরের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। আজ ৯ নভেম্বর কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী ট্রেন আসার আগেই রেলস্টেশনে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এই হামলার নিন্দা করেছেন। ঘটনার পর বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি জরুরি বৈঠক ডেকে তাৎক্ষণিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিস্ফোরণের পর আহতদের কোয়েটা সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সংকট মোকাবেলায় অন্যান্য হাসপাতাল থেকেও চিকিৎসক ও নার্সদের ডাকা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৪৬ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
Facebook Comments