জম্মু ও কাশ্মীরের রিয়াসিতে রবিবার সন্ধ্যা ৬.১৫ মিনিটে ভক্তদের বহনকারী একটি বাসে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে চালক ও কন্ডাক্টরসহ ১০ জন নিহত এবং ৪১ জন আহত হন। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের এক ঘণ্টা আগে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
রিয়াসির এসএসপি মোহিতা শর্মার মতে, সন্ত্রাসীরা কান্দা এলাকার শিব খোদি থেকে কাটরাগামী বাসে গুলি চালায়, এতে চালক আহত হন এবং তিনি বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে ৫৩ আসনের বাসটি খাদে পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ঘটনাস্থলে দুই সন্ত্রাসী ছিল।
https://x.com/AdityaRajKaul/status/1799823744392970633
মোহিতা শর্মা আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা হাইওয়েতে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল। মনে হচ্ছে তারা এই বাসটিকে টার্গেট করেছে কারণ এর যাত্রীরা জম্মু ও কাশ্মীরের বাইরের ছিল। এই ঘটনার পিছনে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আহত যাত্রী সন্তোষ কুমার জানান, সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরা ছিল। লাল কাপড় দিয়ে মুখ বেঁধে রেখেছিলেন। বাসটি মোড়ের কাছাকাছি আসতেই হঠাৎ গুলি শুরু হয়। বাসটি খাদে পড়ার আগে সন্ত্রাসীরা ২৫ থেকে ৩০টি গুলি চালায়।
জম্মু ও কাশ্মীর এলজি দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের পরিবারকে 10 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছে। একইসঙ্গে আহতদের ৫০ হাজার টাকা সাহায্যও দেওয়া হবে। আহতদের সহায়তার জন্য ঘটনাস্থলের কাছে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষও স্থাপন করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে পুলিশ, সেনা ও সিআরপিএফ-এর যৌথ অস্থায়ী নিরাপত্তা বাহিনীর দল গঠন করে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তল্লাশি অভিযানের জন্য পৃথক পাঁচটি দলও গঠন করা হয়েছে। তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে NIA টিমও।
বাস চালক বিজয় কুমারও প্রাণ হারিয়েছেন। খবরে বলা হয়েছে, হামলাকারীরা প্রথমে তাকে লক্ষ্য করে। তিনি রিয়াসি জেলার বাসিন্দা ছিলেন। এছাড়াও কাটরার বাসিন্দা বাস কন্ডাক্টর অরুণ কুমারও মারা গেছেন।
এগুলি ছাড়াও জয়পুরের বাসিন্দা রাজেন্দ্র সাইনি (42), তাঁর স্ত্রী মমতা সাইনি (40), রাজেন্দ্রের বড় ভাই ওমপ্রকাশের মেয়ে পূজা সাইনি (30) এবং পূজার ছেলে লিবংশ ওরফে কিট্টু (2)ও মারা গেছেন। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য। এছাড়া উত্তরপ্রদেশের বলরামপুরের বাসিন্দা রুবি, অনুরাগ এবং দিল্লির বাসিন্দা সৌরভ গুপ্তও মারা গেছেন।
বাসটি পড়ে যাওয়ার পরও সন্ত্রাসীরা গুলি চালাতে থাকে। তিনি বললেন- দর্শনে গিয়েছিলাম। কয়েকজন গুলি চালায়। এরপর বাসটি খাদে পড়ে যায়। আমার সামনে অনেকেই আহত হয়েছেন। আমি মনে করি সেখানে 2-3 জন ছিল। আমার ছেলে একটা লোককে দেখেছে যে পিছন থেকে বাসে হামলা করছে। একই সঙ্গে আরেকটি সূত্র জানায়, বাসটি পড়ে যাওয়ার পরও সন্ত্রাসীরা গুলি চালাতে থাকে। বিকাল ৪টায় বাস ছাড়ার কথা থাকলেও তা ছাড়ে সাড়ে পাঁচটায়।
জম্মু ও কাশ্মীরে তিন দশকের মধ্যে দ্বিতীয়বার এমন হামলা হল। এর আগে, 10 জুলাই, 2017, অনন্তনাগে অমরনাথ যাত্রার সময় সন্ত্রাসীরা একটি বাসে গুলি চালায়। এতে প্রাণ হারান ৭ ভক্ত। একই সময়ে আহত হয়েছেন ১৯ জন।
Facebook Comments