সাদা বাড়িটাতে ঢুকলেই প্রথমেই মন কেড়ে নেবে বাড়ির উঠোন। নিখাদ অক্সিজেন। বাড়ির আনাচে কানাচে নিজের থেকেই সঙ্গী সুর। সুরে ভর দিয়ে ঘরে ঢুকেই প্রথম দর্শনেই ভগবান। তাই সেই কারনেই এই বাড়িতেই বিরাজ করেন দেবী সরস্বতী। অদ্ভুত শান্তি ঘিরে রয়েছে বাড়িটাকে। কার বাড়ি? কয়েকটা লাইন বললে তার মনের হদিশ দিতে পারি। “একশয় কত পেলে সব্বাই ভালো ছেলে বলে? ইচ্ছে করে যত নম্বর ভাসিয়ে দিই জলে। যখন একা বসে চুপচাপ দেখি জোনাকি। প্রশ্ন করো তোমরা কোন সাহসে, এত ফাঁকি!” তখন কটা বাজবে, বিকেল চারটে। ইন্টারভিয়ের কথা ঠিক হয়েই ছিল। তাই সামনে এসে দাঁড়ালো সে। এতই ছোট কি ভাবে কথা বলব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। জানতে চাইলাম, এখন কি খেলতে যাওয়ার সময়? বলল হ্যাঁ। তবে আজ যাবো না। আজ একটু মামা বাড়ি যাবো। ছোট শ্রেয়ান। ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়তা হার মানাবে অনেক বড় বড় তারকাকেও। মেদিনীপুর আর কলকাতা শুধু নয় তাঁকে দৌড়ে বেড়াতে হচ্ছে সাড়া ভারত জুড়ে। এমনকি কিছুদিন আগেই পাড়ি দিতে হয়েছিল সাউথ আফ্রিকা। আড্ডার ছলে অনেক কিছুই বলল শ্রেয়ান ভট্টাচার্য।
ক্লাস সেভেন, কি করে পড়া, গান সবকিছুকে সামলাতে গিয়ে কোনটা কি কম হচ্ছে?
একদম না। হয়েই যায়। দুটোই ভালবাসি। ভালবাসলে সময় বেরিয়েই যায়। আর আমার স্কুলের বন্ধুরা আমাকে খুব ভালবাসে। ওরা বলে ‘তুই গান কর। নোটস আমরা দিয়ে দেব’।
“সারেগামাপা” এই শব্দটা কি শুধুই স্বরলিপি?
গান। শুধু গান আর আমার মা বাবার স্বপ্ন। আমারও স্বপ্ন।
সারেগামাপা যখন জিতলে স্কুল সবাই কি বলত?
এটা একটা মজার ঘটনা। সেই সময় সবাই স্কুলে শ্রেয়ান শ্রেয়ান করত। বলত গান কর। এখন অনেকটা নর্মাল হয়ে গেছে।
কাল মুক্তি পাচ্ছে “হামি” এর ট্রেলার। ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় তোমার গাওয়া “ভুটু”। কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
অনির্বাণ দার গান এটা। এই গানটার মধ্যে অদ্ভুত খুশি আছে। আমি যে সময় গান রেকর্ড করি তখন কিছুই তৈরি হয়নি।
যার জন্য গানটা, তুমি আর সে দুজনই ছোট, তো ওই ভুটুকে কেমন লাগল?
বেশ মিশুখে ছেলে। বেশ কথা বলে। আমিও কথা বলতে ভালবাসি। কিন্তু যাদের সঙ্গে মিশে যাই তাদের সঙ্গে কথা হয়। ওর সঙ্গে কথা বলে ভালো লেগেছিল।
অরিজিৎ সিং এর সঙ্গে কাজ করা হয়ে গেছে, কেমন লাগল?
অসাধারণ অভিজ্ঞতা। প্রথমে ভয় পেতাম মনে হত অত বড় একজন মানুষ কিভাবে থাকবে, কিন্তু কাজ করতে গিয়ে বুঝেছি। উনি ভীষণ ডাউন টু আর্থ।
এখনও পর্যন্ত জীবনের সেরা ঘটনা কি?
আশাজীর সঙ্গে দেখা হওয়া। উনি আমাকে অনেক আশীর্বাদ করেছিলেন। সব থেকে বড় পাওয়া এরা আমাকে মনে রেখেছেন। যখনই দেখা হয়েছে আমায় সবসময় অনেক ভালবাসা আর আশীর্বাদ দিয়েছেন। আরও একটা সেরা ঘটনা আছে। আমার অ্যালবাম। শ্রীজাত আঙ্কেল, জয় আঙ্কেল সকলে আমায় গান শিখিয়েছে। এই অ্যালবামটা মিরচি মিউজিক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল।
গান ছাড়া আর কি ভালো লাগার আছে?
এই উত্তরটা শ্রেয়ান এর মা ভালো দিলেন। বললেন, গান না করলে সারাদিন ইউটিউব-এ গাড়ি দেখে। ও বোধহয় বড় হয়ে গাড়িই কিনবে নিজের ইচ্ছে মত। এর মধ্যে একটা ঘটনা ঘটেছে। আমার বড় ছেলে মানে ওর দাদার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। সকলে মিলে খেতে গিয়েছি বাইরে। হঠাৎ দেখি ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলে, ওরা গাড়ি চালাচ্ছে। আমি তো দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
ছবি : দেবস্মিতা সরকার
Facebook Comments