আজ পয়লা বৈশাখ। বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস, বৈশাখের ১ তারিখ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন তথা বাংলা নববর্ষ পালিত হয় এইদিন। এইবছর বাংলা নববর্ষ ১৪২৭ মঙ্গলবার ১৪ এপ্রিল। এই দিনটি সকল বাঙালি জাতির কাছে ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণের দিন। এপার-ওপার দুই বাঙলাতেই নববর্ষ পালিত হয়। সেই হিসেবে এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন লোকউত্সব হিসাবে বিবেচিত।
কিন্তু এবছর বিশ্বজুড়ে মারণ করোনাভাইরাস মহামারীর প্রকোপে সমস্ত উত্সবই ম্লান হয়েছে। সকলকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গবদ্ধভাবে যেকোনো অনুষ্ঠান করা বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই এবারের নতুন বছর বাড়িতেই কাটাতে হবে। পরিবারের সঙ্গে। এবছর করা যাবে না বাড়ি বাড়ি মিষ্টি বিতরনবা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে ঘুরতে যাওয়া।
এই উত্সব শোভাযাত্রা, মেলা, পান্তাভাত খাওয়া, হালখাতা খোলা ইত্যাদি বিভিন্ন কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়। বাংলা নববর্ষের শুরুতে সকলে “শুভ নববর্ষ” জানিয়ে শুভেচ্ছা আদানপ্রদান করে। নববর্ষের সময় বাংলাদেশে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। ২০১৬ সালে, ইউনেস্কো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত এই উত্সব শোভাযাত্রাকে “মানবতার অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য” হিসেবে ঘোষণা করে। এই উত্সবে নতুন বস্ত্র পরার রীতি রয়েছে। এছাড়াও, রয়েছে পান্তা ভাত ও ইলিশ মাছ ভাজা ইত্যদি খাদ্যের মধ্যে দিয়ে দিনটিকে উদযাপন করে।
বিগত বছরের চৈত্র মাসে শহরের অধিকাংশ দোকানে ক্রয়ের উপর দেওয়া হয়ে থাকে বিশেষ ছাড়, যার প্রচলিত কথ্য নাম ‘চৈত্র সেল’। এই দিনটিতে মিষ্টিমুখ, বাড়িতে বাড়িতে মিষ্টি বিতরণ। আলপনা এঁকে, বাড়ির লক্ষ্মীকে পুজো করা হয়। বাঙালিরা নতুন পঞ্জিকা কেনে। বাংলা ক্যালেন্ডার কেনে। একে অন্যের বাড়ি গিয়ে আনন্দ-মজার মধ্যে দিয়ে দিনটি কাটায়।
তবে আগেই উল্লেখ করেছি এই বছরটা একটু অন্যরকম। বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাস ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সবার উৎসবকেই মাটি করে দিয়েছে। আর যেকোনো উৎসবকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সুস্থ থাকাটা অনিবার্য। তাই করোনাকে হারিয়ে আগামী উৎসবগুলোকে সফল করতে অবশ্যই বাড়িতে থাকুন, সুস্থ্য থাকুন এবং বাড়িতেই পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করুন নববর্ষ। হোয়াট নিউ লাইফের সমস্ত পাঠকদের নববর্ষের প্রীতি ও শুভেচ্ছা।
Facebook Comments